নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ: বর্ষা আসলেই জলবন্দী ডিএনডি ২০ লাখ মানুষ চরম দূর্ভোগে থাকেন। কয়েক দশকের জল যন্ত্রনা সহনীয় হলেও গত এক দশকে ছিল সীমাহীন। ফলে এই প্রকল্পটির উন্নয়নে ৫৫৮ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। প্রকল্প পাশ হওয়ায় বেশ উচ্ছাস প্রকাশ করে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লায় দু’টি সভা করেছেন সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তিনিসহ সভায় আসা মন্ত্রীরা কাজ শুরুর যে দিনক্ষন বলেছিলেন, তা শেষ হয়ে আরো দিন পেরিয়ে গেছে ইতিমধ্যে। এরপরেও শুরু হয়নি কাঙ্খিত ডিএনডি প্রকল্পের কাজ।
গত ১৫ আক্টোবর পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছিলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ডিএনডির উন্নয়ণ কাজ শুরু হবে এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদেরকে এ এলাকায় বিচরণ করতে দেখবেন।
এরপর ফতুল্লার দেলপাড়া ১৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সমাবেশে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু বলেন, ডিএনডির মেগা প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই আপনারা সেনাবাহিনীকে দেখতে পাবেন।
তাদের এই বক্তব্যের ৩ সাপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ডিএনডির উন্নয়ন কাজ করতে দেখা যায়নি সেনাবাহিনীর কোন সদস্যদেরকে। তাই বিভিন্ন শঙ্কা বিরাজ করছে ডিএনডিবাসীর মনে। কারণ এর আগেও ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও সেগুলো আলোর মুখ দেখেনি।
এ বিষয়ে ফতুল্লার বাসিন্দা উমর ফারুক বলেন, ডিএনডির উন্নয়নে ‘দুই সপ্তাহের মধ্যে ডিএনডির উন্নয়ণ কাজ শুরু হবে’ এমন আশ্বাসের পরেও এখন সেনাবাহিনী দেখিনি। শুনেছি এর আগেও ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও সেগুলো আলোর মুখ দেখেনি।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই শামীম ওসমানের সাথে ডিএনডির তুষারধারা, গিরিধারা, পাগলা এলাকা পরিদর্শন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা বাধ তথা ডিএনডি এলাকাতে বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। তখন থেকেই আশায় ছিল কৃত্রিম জলাবদ্ধ বাস করা ডিএনডি বাসী।
এরপর, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডিএনডি এলাকার পানি নিষ্কাশনে ৫৫৮ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
তারই ধারাবাহীকতায় গত ২১ সেপ্টেম্বর ডিএনডি এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। তাই গত ১৫ আক্টোবর জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদের জন্য আয়োজিত বিশাল জনসভা ডাকেন শামীম ওসমান।
এবিষয়ে শিমরাইল পাম্প হাউজের প্রকৌশলী আব্দুল জাব্বার বলেন, এমন খরব আমার কাছেও ছিলো। তবে কেন এখনো কাজ শুরু হয়নি তা আমি জানি না।
এবিষয়টি বিস্তারিত জানাতে ডিএনডির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল আউয়াল মিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।